লাকসামে ইউএনও কাউছার হামিদের বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে সড়ক অবরোধ
জি.এম.এস রুবেল, লাকসাম(কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার হামিদের আকস্মিক বদলি আদেশ প্রত্যাহার ও কর্মস্থলে পুনর্বহালের দাবিতে তিন ধরে সকল শ্রেনী পেশার মানুষের আন্দোলনের পর পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কের লাকসাম বাইপাস মোড়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা ও সামাজিক সংগঠনগুলো সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ সভা করেছে।
প্রতিবাদস্থলে উপস্থিত হয়ে নিজ হাতে ছাত্রদের শান্ত করার চেষ্টা করেন ইউএনও কাউছার হামিদ। তিনি আন্দোলনরত ছাত্রদের জড়িয়ে ধরে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন—
“আমার কর্মজীবনের সেরা সঞ্চয় আপনাদের এই ভালোবাসা। লাকসামের মানুষের আন্তরিকতা আমি কোনোদিন ভুলতে পারব না। যদি অজান্তে কারও প্রতি অন্যায় করে থাকি, আমি ক্ষমাপ্রার্থী।”
তার এমন আবেগঘন বক্তব্যে উপস্থিত অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
এসময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিলন চাকমা এবং লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানাও উপস্থিত থেকে ছাত্রদের সড়ক ছাড়ার অনুরোধ জানান। তবে আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দেন— “বদলি আদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত সড়ক ছাড়ব না।”
দুই ঘণ্টাব্যাপী এই অবরোধে কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকাসহ কুমিল্লা ও নোয়াখালী থেকে আসা শত শত গাড়ি আটকে পড়ে, চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
অবশেষে সন্ধ্যা ৬টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনকারিদের সরিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ওসি নাজনীন সুলতানা জানান— “সরকারি আদেশে বদলি হওয়া স্বাভাবিক নিয়ম। আমরা অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু ছাত্ররা শোনেনি। সেনাবাহিনী আসার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।”
এদিকে বদলি ও কর্মস্থল থেকে অবমুক্তির আদেশ পাওয়ায় ইউএনও কাউছার হামিদ ইতোমধ্যে নতুন কর্মস্থল বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
লাকসামের সাধারণ মানুষ মনে করছেন, এই বিদায় শুধু একটি বদলি নয়— এটি যেন জনতার ভালোবাসার প্রতীকী হারানো।